বিশেষ প্রতিবেদকঃ পাবনার ঈশ্বরদীতে মহাসড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অবৈধ যানবাহন। অদক্ষ চালক আর বেপরোয়া গতির কারনে মহাসড়কে বিশৃঙ্খলার পাশাপাশি প্রতিনিয়ত ঘটছে দূর্ঘটনা। এসব যানবাহনের চালকদের কাছ থেকে নিয়মিত মাসোহারা নেয় হাইওয়ে পুলিশ। ফলে নিষিদ্ধ এসব যানবাহন বন্ধে তেমন কোন কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়না। আর এতে মহাসড়কে বেড়েই চলেছে নিষিদ্ধ এসব যানবাহনের দাপট। বিভিন্ন যানবাহনের চালক, হাইওয়ে থানার বর্তমান ও সাবেক পুলিশ সদস্য, সচেতন মহল, ভুক্তভোগী ও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কিছু বিশ্বস্ত সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য- প্রমাণ ও বেশ কয়েকদিনের টানা অনুসন্ধানে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
জানা গেছে, ঢাকা- কুষ্টিয়া মহাসড়কের লালনশাহ সেতু থেকে দাশুড়িয়া মোড় হয়ে মুলাডুলি পর্যন্ত এবং পাবনা- ঈশ্বরদী মহাসড়কের দাশুড়িয়া মোড় থেকে গাছপাড়া পর্যন্ত পাকশী হাইওয়ে থানা এলাকার ৩৫ কিলোমিটার মহাসড়ক জুড়েই এমন দাপট নিষিদ্ধ যানবাহনের। হাইওয়ে পুলিশের সামনে দিয়েই এসব সড়কগুলোতে ভ্যান, রিকশা, অটোরিকশা, ইজিবাইক, ভটভটি, নছিমন, পাওয়ার ট্রলিসহ সব ধরনের নিষিদ্ধ যানবাহন চলাচল করে।
স্থানীয়রা জানান, অদক্ষ চালক- বেপরোয়া গতি, যত্রতত্র পার্কিং আর যাত্রী ওঠানামা করার কারনে মহাসড়কে বিশৃঙ্খলার পাশাপাশি প্রতিনিয়ত ঘটছে দূর্ঘটনা। অকালে ঝরছে তাজা প্রাণ, পঙ্গুত্ব বরণ করতে হচ্ছে অনেককেই। তবুও এসব যানবাহন বন্ধে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তেমন কোন কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়না।
সূত্র বলছে, এসব যানবাহনের চালকদের কাছ থেকে নিয়মিত মাসোহারা নেন থানার সার্জেন্ট, এস, আই, এএসআই ও তাদের নিয়োগ করা দালাল। প্রতিমাসে অবৈধ যানবাহন চালক- মালিক ও বিভিন্ন স্ট্যান্ডে দায়িত্বরত ব্যক্তিদের কাছ থেকে অন্তত ১০-১২ লাখ টাকা চাঁদাবাজি করা হয়।
বিভিন্ন যানবাহনের চালকরা জানায়, মাঝেমধ্যে অভিযান পরিচালনা করে হাইওয়ে পুলিশ। কিন্তু যেসব যানবাহনের সাথে মাসিক চুক্তি নেই সেসব যানবাহন আটক করে মামলা দেয় তারা। এমনকি মামলার ভয়ভীতি আর পুরোনো মামলার স্লিপ দেখিয়েও কৌশলে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হয়।
তবে এ বিষয়ে পাকশী হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী মাসুদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি আসার পর থেকেইতো দেখতেছি চলতেছে। আমি আসার আগে থেকেইতো চলা দেখতেছি। তবে একথা বলার পর আনুষ্ঠানিকভাবে কোন বক্তব্য দিতে রাজি না হলেও এ বিষয়ে পরে কথা বলবেন বলেও জানান ওসি। এরপর বার বার যোগাযোগ করেও তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
মহাসড়কে এসব নিষিদ্ধ যানবাহনের দৌরাত্ম্য বন্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি কতিপয় অসাধু পুলিশ সদস্য ও দালাল চক্রের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।